Wednesday 14 December 2016

ক্ষণ জীবন অলমিতি


“আপনাকে  একটা কফি দেব তো স্যার ?”
“ ম্যাডাম তো আজকে কন্টিনেন্টাল  খেতে চেয়েছেন “
“একদিন আপনাকে ভালো করে ডিনার খাওয়াব, স্যার
“ আজই চলে যাচ্ছেন ম্যাডাম ?”
“আচ্ছা , ম্যাডাম, আমাদেরও আজ ডিউটি শেষ , আপনারা ও ফিরছেন” ।।


ব্যাস, এইখানে থেমে গেলে ভাবা যেতেই  পারে সমুদ্র , নুড়ি পাথর ,ঝিনুক ঝাউবন  অথবা পাহাড় ,  কুয়াশা , মেঘ রোদ্দুর  বিরহ মধুর বাতাসের খোলা ক্যানভাসের সামনে উইক এন্ডে চলছে ননাসুদু ( নর নারীর সুখ দুঃখ,পূষন দেব উবাচ  ), নির্জন কটেজ , বা শান্ত বারান্দা কিন্তু না এটি একটি হাসপাতালের ঘর বিলাসী পর্যটন এবং ব্যয়  বহুল চিকিৎসা ,দুটোর মধ্যে মূল্যবোধের ফারাক এখন খুব কম দুটোই ব্যাপক লাভজনক ব্যাবসা

কথায় বলে বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা , ডাক্তার , উকিল আর পুলিশ ছুঁলে ঘা এর সংখ্যা তো লাফিয়ে  লাফিয়ে বাড়বে এবং ঘটনা যে কোনদিকে পরিণতি নেবে তার কিচ্ছুটি আগে থেকে কেউ বুঝতে পারবেন নাকো এর মধ্যে বাঘ টাই বরং ভালো ডিসিশন মেকিং এ খুব একটা সমস্যা নেই হয় এস্পার কি ও স্পার
দায়ে ঠেকে হাসপাতালে যখন যেতেই হল সমস্ত পরিবেশ তখন আমার কাছে অনন্ত অঙ্ক পরীক্ষার খাতা খালি গুরগুর আর ঢিপঢিপ আর এরই মধ্যে গোদের  ওপর বিষ ফোঁড়ার মতো এসে গেল  জগদ্ধাত্রী পুজো এখন পুজোর সংখ্যা বেড়েছে যুব শক্তির আত্মপ্রকাশ দরকার আগে আমাদের পাড়ায় একটা পুজো হত , এখন গোটা সাতেক   তাছাড়া সন্সকিতি সম্পন্ন (উচ্চারণ টা ইংরিজি এস এর মতো) হবার উদগ্র বাসনার জন্য সেই পুরনো ব্র্যান্ড রবিবাবু মৈত্রেয়ী দেবীর বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ কোন একটা বুধবার যাবেন বেশ সাজো সাজো রব এদিকে হয়েছে কি,  মৈত্রেয়ী দেবীর খাস ভৃত্য দিন ক্ষণ এবং কবির নাম  সব গুলিয়ে জিজ্ঞেস করল , “আচ্ছা , মা , রবিবার তো  আমাদের বাড়িতে বুধুবাবু আসবেন , না? “
আমাদের পাড়ার পুরনো পুজোটায় দুদিন আগে থেকেই সেই রবিবাবু বাজছেন সে কি সব গান ! ভালো করে শুনে বুঝলাম একটাই সিডি বাজছে যার দু তিনটে গান ছেড়ে দিলে বাকি সবগুলোই তখন আমার হৃদপিণ্ডের গতি বন্ধ করার পক্ষে যথেষ্ট কি নেই সেখানে  , যে রাতে  মোর দুয়ারগুলি, যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন,  তোমার অসীমে ,বাজে করুণ  সুরে থেকে শুরু করে আছে দুঃখ আছে মৃত্যু আমি আতঙ্কিত হয়ে ভাবতে থাকি , আমাকেই  এমন সময়ে এগুলো শুনতে হচ্ছে কেন? সন্সকিতি সম্পন্নদের যে বোধ সম্পন্নও হওয়া দরকার সেটা তো এখনো তারা বোঝে নি কিন্তু আমি ততক্ষণে দিনশেষে দেখি ছাই হল সব হুতাশে হুতাশে
পূষন দেব বলল রাত করে বাড়ি ফেরার সময় ও সেই পুজো প্যান্ডেলে গিয়ে ছিল শুনশান পাড়া অবাক রাতের তারারা আকাশে মিটি মিটি করে চায় , আর টুনি বাল্বগুলো ঝিকিমিকি জ্বলছে ঠাণ্ডা রাত প্রতিমার সোনালি মুখ ওর নাকি খুব ভালো লাগছিল মাইকে অবিশ্যি তখন দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায়  রইল না , বাজছিল হঠাৎ  পূষন দেব  দেখে , আরে এতো ছোটকাই , পুজোর মুখ্য উদ্যোক্তাদের একজন সে ঠিক করল ওকে  যখন এতো রাতে দেখাই গেছে তাহলে বলেই ফেলি ,”কি সব গান বাজাচ্ছ বল তো তিনদিন ধরে ? কার শোকসভা , কার ফেয়ারওয়েল , ভাই? বেচারা দিদি তো তোমাদের গানের গুঁতোয় প্রায় মরতে বসেছে   হাসপাতালে যাবার আগেই ”
কিন্তু বলতে পারল না আমি অধৈর্য  হয়ে বলে ফেললাম , কেন কিছু বলতে পারলি না ? এদিকে খালি বিদায় বিদায় তানপুরার জমা ধুলো  শুনতে শুনতে আমার নাড়ি ছেড়ে যাবার জোগাড়
পূষন দেব বলল , ছোটকাই তার ভুঁড়ির আশি শতাংশ বের  করে একটা পাটাতনে মাথা দিয়ে , একহাত দিয়ে চোখ ঢেকে আরেকটা হাত আকাশের দিকে সটান তুলে একটা পায়ের ওপর আরেকটা পা দিয়ে শুয়ে শুয়ে ওপরে তোলা হাত আর মাটিতে  রাখা পা দিয়ে গানের সঙ্গে তাল দিচ্ছে এতো সুন্দর জমাট মৌতাতের ছবি খানা  আর খানখান করতে  ইচ্ছে করল না রে


মানুষের ভয় , দুরবস্থা এই সব সময়ে  প্রচুর উপদেষ্টা জুটে যায় , প্রচুর বীরত্বব্যঞ্জক কাহিনি সমানেই সামনে  আসতে থাকে আমার ক্ষেত্রেও তাই হল এটি একটি আদ্যন্ত সত্যি ঘটনা কোন ভেজাল নেই
হয়েছিল কি , বলরামপুর গ্রামের অনাদি ডাক্তারের বিশেষ সুনাম  ছিল উনি একটা নার্সিং হোম পর্যন্ত খুলেছিলেন ওই গ্রামেরই অজয় বাবু এখন শহরে চাকরি করেন সেবারে অজয়বাবু গ্রামে এসে বেজায় অসুস্থ হয়ে পড়েন পেটে ব্যাথা খুব  অনাদি ডাক্তার নিদেন হাঁকল “ওহে তোমাকে একটা অপারেশন করাতে হবে বাপু , এখখুনি “ অজয়বাবু নার্সিং হোমে ভর্তি হয়ে গেলেন অপারেশনের দিন তার শরীরের আধখানা অবশ করে সামনে একটা পর্দা ঝুলিয়ে ডাক্তার সব  জোগাড় যন্তর শুরু করলেন অজয়ের কানে সব শব্দ ঢুকতে লাগল “ছুরি কাঁচি চিমটি সব  এনেছিস ? ও ই মাথামোটা হরেন , বলি তুলো গজ, ডেটল রেখিছিস তো? “
“সে সব বলতে লারবেক , সব নিয়া এসচি বাবু “
নানান খুটুর খাটুর শব্দে অজয়বাবু বারবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন “ও ডাক্তারবাবু সব ঠিক আছে তো ‘?
“আঃ তুমি বাপু বড্ড উতলা , শুয়ে থাক দিকি , আমাকে কাজ করতে দাও “
খানিক পরে হরেন ডাক ছাড়ে “ বাবু , ন্যান তাহলে , শুরু করেন “
বেশ যাত্রা থিয়েটারের মতো বড়বড় আলো জ্বলে উঠলো পালাগান শুরু হবে এমন সময় , এই যা , ঝপ করে আলো নিভে সব  অন্ধকার
অ জয়বাবু প্রায় ডুকরে কেঁদে ফেললেন আর ডাক্তার এক ধমক দিয়ে বললেন কি রকম মানুষ তুমি ভায়া ? আরে আলো গেছে তো কি হয়েছে? পাঁচ ব্যাটারির টর্চ আছে না আমাদের ? কিসসু ভেবো না এই হরেন , যা তো , ওই বাইরে যে ছেলেটা দাঁড়িয়ে আছে ,ব্যাটাকে ভেতরে ডেকে নে
অজয়বাবুর কাকার ছেলে সদ্য কলেজে ঢোকা  টিকিটিকে রেবন্ত ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে  ঘরে ঢুকলে ডাক্তার বলে নাও তো বাপু , এই টর্চ টা ভালো করে, এই এমনি করে ধরত হ্যাঁ , ঠিক আছে
কাজ চলছে হরেনের গলা শুনতে পেলেন অজয়বাবু “ পেরায় হইয়ে এলো , বলেন?”
এমন সময়ে রেবন্ত কোন আক্কেলে নিচের দিকে বেমক্কা  তাকিয়ে ফেলল , রক্ত, নাড়ীভুঁড়ি ,এই সব দেখেই টর্চ হাতে নিয়েই সঙ্গে সঙ্গে মুচ্ছো
এ বাবু , দ্যাখেন দ্যাখেন , ব্যাটা তো মুচ্ছো গেলো এখন  কি হবেক ?
আবার চারদিক অন্ধকার ডাক্তার বলল যা শিগগিরি , রামলোচন দারওয়ান কে ধরে নিয়ে আয়
অপারেশন হয়ে গেলো ডাক্তার এসে অজয়বাবুকে বলল , কোন চিন্তা নেই করে দিয়েছি ঘেমে যে এক্কেরে জল হয়ে গ্যাচো , হরেন রুগীকে হাওয়া কর
হরেন একটা ভাঙা তালপাতার পাখা নিয়ে হাওয়া করতে লাগল
ডাক্তার বলল , সব ঠিকই আছে ভায়া , তবে তোমাদের বাড়ির ওই ছেলেটা খুব দুর্বল ওকে একটু যত্ন আত্তি কর তো
আমি ও  ওরকম অজয়ের মতো,   চিঁ চিঁ করে বললুম  , আচ্ছা , অপারেশনে কত সময় লাগবে ?’’
দাড়ি গোঁফের ভেতরে জুলজুলে চোখ জিজ্ঞেস করল “ শাম কো ফ্লাইট পকড়না হ্যাঁয় ক্যা ?”
আমি আবার চিঁ চিঁ করে বললাম , না মানে ইয়ে
তারপর তো আর কিছু জানি না
আস্তে আস্তে  হুঁশ ফিরলে একদিন চেয়ারে বসলাম দেখি কি , লালচটি নীল চটি ঘর পরিষ্কার করছে ততদিনে চিঁ চিঁ ভাব আর নেই , একটু কোঁ কোঁ  করে গলা তুলেই বললাম , শুনুন, হয় আপনি ভুল চটি পরে এসেছেন বা আমার মাথা বা চোখ কোনও একটা আপনাদের খরচের বহর দেখে  খারাপ হয়ে গেছে
উত্তর এলো “ না দিদিভাই ( এবারে ম্যাডাম বলে নি , তাও ভালো দিদিমা বলে নি ) আপনার মাথা আর চোখ দুটোই একদম ঠিক যদি বাইরে জুতো বিক্কিরি করে দি , তাই সারা হাসপাতালে এমনটাই ব্যাবস্থা এক পাটি লাল, একপাটি নীল অডিটের লোক তো ,তাই এমন অভিনব ইন্টারনাল কন্ট্রোল দেখে মনে মনে একটু খিকখিকে  হাসি এলো



তারপর দিন কয়েক পরে  মেডিক্লেমের চক্করে ফেঁসে রাত বারোটায় হুইল চেয়ারে করে যখন বেরুচ্ছি তখন হাসপাতাল ধোয়া হচ্ছে সেই ফ্যানার বুদবুদের ভেতরে আস্তে আস্তে হুইল চেয়ার এগোচ্ছে আর আমি মনে মনে বলছি, “ কোনওরকমে  বাইরে নিয়ে যাও , বিপত্তারিনি আর হাড়গোড় ভেঙ্গে দিও না গো মা “ এমন সময় দেখি জুলজুলে চোখ একটা দরজা ঠেলে বেরিয়ে আসছে
আমি এবার হাঁক ছাড়লুম  “ ও ডাক্তার , এই যে এই দিকে “
বাঃ , ছাড়া পেয়ে গেছো
বললুম “ ফ্লাইট পকড়না হ্যাঁয় না ? “
বেশ খানিকটা হেসে জুলজুলে চোখ বলল  ডক্টর কো কভি সি ইউ মাত  বোলো  এই বলে রাজেশ খান্না আর দেবানন্দ পাঞ্চ করে একটা  হাতের মুদ্রা করে সিঁড়ির  আড়ালে মিলিয়ে যেতে যেতে বলল বাই বাই , বাই বাই

কোই না রোকো দিল কি উড়ান কো
দিল উয়ো  চলা ….
আজ ফির জিনে কি তমন্না হ্যাঁয়
আজ ফির ….
  


Monday 12 December 2016

দিল্লি দাস্তান ৭


গোরস্থানে মধুরাত
কেমন সোনার পাথরবাটি শোনাচ্ছে কি না ? তাহলে ধান ভানার আগে শিবের গীত খানিকটা গাওয়াই যাক । সংস্কৃতে প্রাচীনকালের অনেক হেঁয়ালি , ধাঁধা , উদ্ভট শ্লোকের ছড়াছড়ি । রাজা সভাকবিকে এতো পাত্তা দেন, কিন্তু পণ্ডিতকে অতটা নয় ।এই নিয়ে পণ্ডিতের মন বড় খারাপ । কবির মধ্যে কীই এমন বেশি আছে যে রাজামশাই এতো মজে আছেন । রাজা বললেন বটে? ওহে পন্ডিত তোমার সামনে ওটা কী পড়ে আছে ? পন্ডিত বললেন কেন? শুষ্ক ং কাষ্ঠ ং তিষ্ঠ ত্যগ্রেকবি তখন সবে চাট্টি দই চিঁড়ে মধু দিয়ে মেখে  খেয়ে ধীরে ধীরে আসছেন । হঠাৎ  রাজা চেঁচিয়ে বললেন ওহে সভাকবি , সামনে ওটা কী পরে রয়েছে , একটু দ্যাখো তো । কবি জানালেন নীরস তরুবরো পুরতো ভাতি ।  
একই কথা, কিন্তু প্রকাশভঙ্গি আলাদা । তাই তোমার থেকে কবিকে একটু বেশি ভালোবাসি যে ।
সিন্দুরবিন্দু বিধবা ললাটে! সে কি করে হয় ? হেঁয়ালির  জট ছাড়াও দিকি । তিনটি প্রশ্নের সম্মিলিত উত্তর এলো  ।
পুরনারীদের কপালে কে শোভা পায় ? সটান উত্তর এলো, সিন্দুর ।
মধুযামিনীর রাতে কোন নারী কাঁদে? যে দুর্ভাগ্যে বিধবা হয়েছে ।
কস্মিন বিধত্তে শশিনাম মহেশ ? চাঁদকে মহাদেব কোথায় ধারণ করেন? ললাটে। কপালে ।
তাই গোরস্থানে সাবধান না হয়ে মধুরাত কেন সেটা বলতে গিয়ে আরেকটু শিবের ভজনা করি । ধানগুলো বরঞ্চ খানিক তোলা থাক ।
শেষ মুঘল বাহাদুর শাহ জাফর , মেহরাউলিতে জাফরমহল বানিয়েছিলেন । তখন আলোর রোশনাই কমে এসেছে , আতরের খুশবু ফিকে হয়েছে , রঙের জেল্লা গেছে ।  একেই অপদার্থ, বেচারা কবি মানুষ। ব্রিটিশ তো সব লুটে নিয়ে গেলো ।বাহাদুর শাহ গরম কালে জাফরমহলে মেহরাউলির সবুজের মধ্যে প্রাণ জুড়োতে আসতেন ।  এই মেহরাউলিতেই আছে কুলিখানের সমাধি । কুলি খান তেমন কোন মনে রাখার মতো চরিত্র নয় । কিন্তু কুলিখানের মা ছিলেন ভয়ানক জাঁদরেল । আকবরের ধাই মা । মাহাম আনঘা । তার এক ছেলে হল এই কুলি খান । ইতিহাসে উপেক্ষিত হলেও তার  গোরস্থানটি  কিন্তু খাসা । আটকোনা ছিমছাম , বড় সুন্দর ।  ভেতরে চমৎকার কারুকাজ । চত্বর থেকে দেখা যায় কুতুব মিনার ।


মুঘল দরবারের শেষ ব্রিটিশ রেসিডেন্ট ছিলেন টমাস মেটকাফ । সব লুটে পুটে খেয়ে  খুব আরামে গা ভাসিয়ে থাকতেন । তিনি এবার করলেন কি কুলিখানের সমাধিটাকে বেশ খানিক মেজে ঘসে সেখানে একটা রিসোর্টের  মতো বানিয়ে ফেললেনসোজা কথায় বলতে গেলে গেস্ট হাউস । চারদিকে প্রচুর গাছপালা লাগানো হল । লোদি আমলে বানানো একটা মান্ধাতা  তালাও কে নৌকাবিহারের কাজে লাগিয়ে দিলেন ।ব্যাবসা বুদ্ধি বলে কথা!  মনের মতো করে পুরো ব্যাপারটা সাজিয়ে নাম দিলেন “দিলখুশা” । কুলি খানের মকবারার  ওপর দিলখুশায় শুরু হল  সাহেবি মোচ্ছবের ঢালাও কারবার । তার ওপর আবার নব বিবাহিতদের মধুচন্দ্রিমা যাপনও  শুরু হয়ে গেলো ।  মেটকাফ আসলে দিলখুশা কে ভাড়া দিতেন হানিমুন করার জন্য । একের পর এক নতুন বরবউ হাতে হাত দিয়ে কুলিখানের হাড়গোড়ের ওপর দাঁড়িয়ে শ্যাম্পেনের ছিপি  খুলে অরগ্যানের বাজনার সঙ্গে কোমর জড়িয়ে নাচছে, ভেতরে সাঁঝবাতির নরম আলো। বাইরে ফুরফুরে হাওয়ার সঙ্গে মস্ত বড় চাঁদ উঠেছে কুতুব মিনারের পেছনে।  মকবারা ভাড়া খাটিয়ে পকেটে আসছে দেদার চাঁদি । আর চাঁদি গুনতে গুনতে  মেটকাফ আড়ালে বসে  টেরিয়ে টেরিয়ে দেখতে থাকে জাফর মহলের ভেতর বাহাদুর শাহ  করেটা কি  ?