কোথায় যেন পড়েছিলাম
লীলা মজুমদার লিখেছিলেন তিন ধরনের গপ্পো সবাই খুব পছন্দ করে । প্রেমের , ভূতের
আর চোরের । আমার আবার প্রেমের গপ্পো লিখতে গেলেই সেগুলো সব হাসির গল্প হয়ে যায় ।
এবার লিখতে গিয়ে মনে হল কলেজলাইফে আমাদের দুজন বন্ধু ক্লাসে ঢুকলেই আমরা সমস্বরে চেঁচিয়ে
বলতাম , আজ কি কি হল ?
ওরা ইনস্ট্যান্ট গল্প বানাত কিনা জানিনা , তবে ওদের কলেজ যাত্রা পথটি নাকি নানান কিসসা তে ভরে থাকত ।মানে পথ নাটিকা বলা যেতে পারে । মধুসূদন দাদার ভাঁড়ের মতো সেগুলো আর শেষ হত না । একদিন একজনা বলল , জানিস আজ ট্রামে লেডিস সিটের সামনে এক বুড়ো ভদ্রলোক ঝুঁকে পড়ে, ও দিদি একটু আপনার খোঁপা টা হাত দিয়ে সরিয়ে নিন , ও মা জননী একটু সরে বস না গো । মেয়েরা ভারি বিরক্ত । কি অসভ্য লোকরে বাবা ! একেবারে জানলার সামনে ঝুঁকে পড়ছে । এক ভারিক্কি দিদিমণি গোছের মহিলা হাঁকিয়ে বললেন , কি কচ্ছেন বলুন তো ? কি চাইছেন আপনি ?
ভদ্রলোক বললেন বাইরে টা একটু দেখব , তাই ।
মহিলা আরও হাঁকিয়ে বললেন ক্যালকাটা ইউনিভারসিটির সামনে দিয়ে যাচ্ছে , আর কিছু?
ভদ্রলোক কিছু না বলে ব্যালেন্স সামলে হাতদুটো জোড় করে একটা প্রণাম করে নিজের মনেই বলে উঠলেন , বাবা যা জ্বালিয়েছিলি ! প্রণামটা ইউনিভারসিটির উদ্দেশে নিবেদন করলেন ।
আমরা সমস্বরে বললাম , বাজে কথা , বানিয়ে বলছিস ।
ওরা বলত, দুজনে মিলে বানিয়ে বানিয়ে বলব? সত্যি রে !
একদিন এসে বলল , জানিস আজ একটা ছেলে পাশের লোকটাকে বলল দাদা অনেক ক্ষণ ধরে আমার ঘাড়ের ওপর গরম নিঃশ্বাস ফেলছেন কিন্তু ।
লোকটা বলল আমিতো হট যোগ প্রাকটিস করিনি । জ্যান্ত মানুষের নিঃশ্বাস গরমই হয় । ঠাণ্ডা করার উপায় আমার জানা নেই ।
আরেকবার কে যেন বলল , সেই কখন থেকে আমার পায়ের ওপর চেপে দাঁড়িয়ে আছেন , কিছু বলছি না বলে মজা পেয়েছেন না ? আমি নেহাত ভালোমানুষ , তাই এতক্ষণ কিছু বলিনি ।
পাশের জন খুব নির্বিকার ভাবে নিচের দিকে তাকিয়ে বললেন, কই দেখি , না এটা আমার পা নয়।
সেই দুজনা বন্ধুর একজনার মাসি একদিন গানের ইশকুল থেকে ফেরার সময় দেখে বন্ধুরা খুব হুল্লোড় করে খেলছে , মাসি ও অমনি দলে নেমে পড়লো , গানের খাতাটা পাঁচিলের ওপর রেখে । খেলে ধুলে বাড়ি ফেরার সময় দেখে কি খাতাটা এবং তারমধ্যে যত অশ্রু নদীর সুদূর পারে , দিনের বেলা বাঁশি, বকুল মুকুল পলাশ শিরীষ সব চিবুচ্ছে এক বে আক্কেলে ছাগল । খাতাটার দফা রফা , আর মাসিরও স্কুলের গণ্ডি
পেরুতেই বিয়ে । নতুন মেসো নাকি দুঃখ করে বলেছিল , এত গান ভালোবাসি , এরা কেউ গাইতেই জানে না । তাতে খুব চটে গিয়ে মাসি বলেছিল , সে তো সেই ছাগলটার জন্য , আমার অমন সুন্দর গানের খাতাটা ।
ওরা ইনস্ট্যান্ট গল্প বানাত কিনা জানিনা , তবে ওদের কলেজ যাত্রা পথটি নাকি নানান কিসসা তে ভরে থাকত ।মানে পথ নাটিকা বলা যেতে পারে । মধুসূদন দাদার ভাঁড়ের মতো সেগুলো আর শেষ হত না । একদিন একজনা বলল , জানিস আজ ট্রামে লেডিস সিটের সামনে এক বুড়ো ভদ্রলোক ঝুঁকে পড়ে, ও দিদি একটু আপনার খোঁপা টা হাত দিয়ে সরিয়ে নিন , ও মা জননী একটু সরে বস না গো । মেয়েরা ভারি বিরক্ত । কি অসভ্য লোকরে বাবা ! একেবারে জানলার সামনে ঝুঁকে পড়ছে । এক ভারিক্কি দিদিমণি গোছের মহিলা হাঁকিয়ে বললেন , কি কচ্ছেন বলুন তো ? কি চাইছেন আপনি ?
ভদ্রলোক বললেন বাইরে টা একটু দেখব , তাই ।
মহিলা আরও হাঁকিয়ে বললেন ক্যালকাটা ইউনিভারসিটির সামনে দিয়ে যাচ্ছে , আর কিছু?
ভদ্রলোক কিছু না বলে ব্যালেন্স সামলে হাতদুটো জোড় করে একটা প্রণাম করে নিজের মনেই বলে উঠলেন , বাবা যা জ্বালিয়েছিলি ! প্রণামটা ইউনিভারসিটির উদ্দেশে নিবেদন করলেন ।
আমরা সমস্বরে বললাম , বাজে কথা , বানিয়ে বলছিস ।
ওরা বলত, দুজনে মিলে বানিয়ে বানিয়ে বলব? সত্যি রে !
একদিন এসে বলল , জানিস আজ একটা ছেলে পাশের লোকটাকে বলল দাদা অনেক ক্ষণ ধরে আমার ঘাড়ের ওপর গরম নিঃশ্বাস ফেলছেন কিন্তু ।
লোকটা বলল আমিতো হট যোগ প্রাকটিস করিনি । জ্যান্ত মানুষের নিঃশ্বাস গরমই হয় । ঠাণ্ডা করার উপায় আমার জানা নেই ।
আরেকবার কে যেন বলল , সেই কখন থেকে আমার পায়ের ওপর চেপে দাঁড়িয়ে আছেন , কিছু বলছি না বলে মজা পেয়েছেন না ? আমি নেহাত ভালোমানুষ , তাই এতক্ষণ কিছু বলিনি ।
পাশের জন খুব নির্বিকার ভাবে নিচের দিকে তাকিয়ে বললেন, কই দেখি , না এটা আমার পা নয়।
সেই দুজনা বন্ধুর একজনার মাসি একদিন গানের ইশকুল থেকে ফেরার সময় দেখে বন্ধুরা খুব হুল্লোড় করে খেলছে , মাসি ও অমনি দলে নেমে পড়লো , গানের খাতাটা পাঁচিলের ওপর রেখে । খেলে ধুলে বাড়ি ফেরার সময় দেখে কি খাতাটা এবং তারমধ্যে যত অশ্রু নদীর সুদূর পারে , দিনের বেলা বাঁশি, বকুল মুকুল পলাশ শিরীষ সব চিবুচ্ছে এক বে আক্কেলে ছাগল । খাতাটার দফা রফা , আর মাসিরও স্কুলের গণ্ডি
পেরুতেই বিয়ে । নতুন মেসো নাকি দুঃখ করে বলেছিল , এত গান ভালোবাসি , এরা কেউ গাইতেই জানে না । তাতে খুব চটে গিয়ে মাসি বলেছিল , সে তো সেই ছাগলটার জন্য , আমার অমন সুন্দর গানের খাতাটা ।
যাই হোক ,এদেরই
একজনার কাছে একটা চোরের গপ্পো শুনেছিলাম । হয়েছিল কি মুকু দিদি আর জামাইবাবু
কলকাতার শহরতলীতে খুব ফাঁকা জায়গায় বেশ খানিকটা জমি কিনেছিল এবং সকলের
জোরজবরদস্তিতে একখানা দোতলা বাড়ি ও তুলে ফেলে । চারদিকে ধু ধু মাঠ , কোন বাড়িঘর নেই , শেয়াল ডাকে । কিন্তু মুকুদিদির
শাশুড়িমায়ের কড়া আদেশ হল ওই বাড়িতে তেরাত্তির থাকতেই হবে । সঙ্গে যাবে ও
বাড়ির কুঁড়ের বাদশা পুরনো গৃহ সেবক হরেন । যাওয়ার ব্যাপারে যদি ও তার কোনোরকম
উৎসাহ দেখা যায় নি ।
দিনমানের কাজকর্ম সব চুকেবুকে গেলে বেশ জমিয়ে গা ছমছমে অন্ধকার নামল । নিশ্ছিদ্র কালোর মধ্যে ছোট্ট একবিন্দু আলোর মতো মুকু দিদির বাড়ি জেগে রইলো সাড়ে তিনটি প্রাণী নিয়ে , মুকুদিদি , জামাইবাবু , ওদের একরত্তি মেয়ে আর হরেন ।
খাওয়া দাওয়া হয়ে গেলে এবার ঘুমোতে যাবার পালা । হরেন কিছুতেই নিচের ঘরে থাকতে চাইছিল না । কিন্তু সবাই মিলে দোতলায় থাকলে চলবে কি করে ? একতলাটা ফাঁকা রাখা যায় না । একদম অচেনা জায়গা ।
মুকুদিদি তাদের দোতলার শোবার ঘরে ঢুকে দরজা জানালা ভালো করে বন্ধ করে বন্ধ দরজার সামনে চেয়ার , চেয়ারের ওপর বালতি , বালতির ওপর স্টিলের থালা সব চাপা দিয়ে যতদূর সম্ভব নিরাপত্তার ব্যবস্থা করল । একে একে বাতি নিভে গেলো । কারুর চোখেই তেমন ঘুম আসছে না । কেমন কেমন যেন লাগছে । এইভাবে বেশ কিছু ক্ষণ কাটার পর হঠাত একটা শব্দও ওদের কানে আসে । দুম দুম দুম দুম । শব্দটা একটু একটু করে বাড়ছে মনে হচ্ছে । শাবল টাবল দিয়ে দরজা ভাঙছে না তো ? হরেনেরও কোন সাড়াশব্দ নেই । মুকুদিদির কপালে ঘাম জমছে । এবার আর ঘরে বসে থাকা চলে না । কত্তা গিন্নি দুজনে দুহাতে ফুল ঝাড়ু আর একটা লাঠি নিয়ে পা টিপে টিপে স্টিলের থালা, জলের বালতি কাঠের চেয়ার সরিয়ে দরজার ছিটকিনি খুলে বাইরে এলো । সব অন্ধকার । আওয়াজটা নিচের ঘর থেকেই আসছে মনে হচ্ছে ,নির্ঘাত দরজা ভাঙছে । দুজনে ধীরে ধীরে শব্দের উৎস ধরে ধরে এসে দাঁড়ালো হরেনের ঘরের সামনে । আওয়াজ আসছে বেশ ভালো মতোই । তবে কি কোন গুপ্তধনের জমির ওপর ওরা বাড়ি তুলেছে ? ডাকাতগুলো মেঝে খুঁড়ে মালকড়ি হাতাচ্ছে এখন । আর হরেন ? সে ব্যাটা বোধহয় মরেই গেছে । খুব চাপা গলায় জামাই ডাকে হরেন , এই হরেন , শুনতে পাচ্ছিস ?
ব্যাস , বলা মাত্রই দরজা খুলে হরেন বলল , যাক বাঁচা গেলো । এসে পড়েছেন তাহলে । মানে? কারা আওয়াজ করছিল ? আর কোথা দিয়ে পালাল ?
আওয়াজটা আমিই করছিলাম । না , ভাবলাম ,আপনারা তো ওপরে নাক ডাকিয়ে দিব্যি শুয়ে পড়লেন , এদিকে যদি সত্যি চোর ডাকাত আসে তাহলে তো প্রথমে ওরা আমার হাতদুটো বেঁধে ফেলবে ,তারপর মুখ বেঁধে ফেলবে , তারপর চুরি চামারি যা করার করবে । আমার তো হাত বন্ধ । মুখ বন্ধ । তাই আমি পা দিয়ে দরজায় মেরে মেরে দেখছিলাম আপনারা শুনতে পান কিনা ? যাক , শুনতে পেয়েছেন তাহলে । এবার নিশ্চিন্ত হওয়া গেলো ! তবে এসেছেন কিন্তু বেশ দেরি করে ।
দিনমানের কাজকর্ম সব চুকেবুকে গেলে বেশ জমিয়ে গা ছমছমে অন্ধকার নামল । নিশ্ছিদ্র কালোর মধ্যে ছোট্ট একবিন্দু আলোর মতো মুকু দিদির বাড়ি জেগে রইলো সাড়ে তিনটি প্রাণী নিয়ে , মুকুদিদি , জামাইবাবু , ওদের একরত্তি মেয়ে আর হরেন ।
খাওয়া দাওয়া হয়ে গেলে এবার ঘুমোতে যাবার পালা । হরেন কিছুতেই নিচের ঘরে থাকতে চাইছিল না । কিন্তু সবাই মিলে দোতলায় থাকলে চলবে কি করে ? একতলাটা ফাঁকা রাখা যায় না । একদম অচেনা জায়গা ।
মুকুদিদি তাদের দোতলার শোবার ঘরে ঢুকে দরজা জানালা ভালো করে বন্ধ করে বন্ধ দরজার সামনে চেয়ার , চেয়ারের ওপর বালতি , বালতির ওপর স্টিলের থালা সব চাপা দিয়ে যতদূর সম্ভব নিরাপত্তার ব্যবস্থা করল । একে একে বাতি নিভে গেলো । কারুর চোখেই তেমন ঘুম আসছে না । কেমন কেমন যেন লাগছে । এইভাবে বেশ কিছু ক্ষণ কাটার পর হঠাত একটা শব্দও ওদের কানে আসে । দুম দুম দুম দুম । শব্দটা একটু একটু করে বাড়ছে মনে হচ্ছে । শাবল টাবল দিয়ে দরজা ভাঙছে না তো ? হরেনেরও কোন সাড়াশব্দ নেই । মুকুদিদির কপালে ঘাম জমছে । এবার আর ঘরে বসে থাকা চলে না । কত্তা গিন্নি দুজনে দুহাতে ফুল ঝাড়ু আর একটা লাঠি নিয়ে পা টিপে টিপে স্টিলের থালা, জলের বালতি কাঠের চেয়ার সরিয়ে দরজার ছিটকিনি খুলে বাইরে এলো । সব অন্ধকার । আওয়াজটা নিচের ঘর থেকেই আসছে মনে হচ্ছে ,নির্ঘাত দরজা ভাঙছে । দুজনে ধীরে ধীরে শব্দের উৎস ধরে ধরে এসে দাঁড়ালো হরেনের ঘরের সামনে । আওয়াজ আসছে বেশ ভালো মতোই । তবে কি কোন গুপ্তধনের জমির ওপর ওরা বাড়ি তুলেছে ? ডাকাতগুলো মেঝে খুঁড়ে মালকড়ি হাতাচ্ছে এখন । আর হরেন ? সে ব্যাটা বোধহয় মরেই গেছে । খুব চাপা গলায় জামাই ডাকে হরেন , এই হরেন , শুনতে পাচ্ছিস ?
ব্যাস , বলা মাত্রই দরজা খুলে হরেন বলল , যাক বাঁচা গেলো । এসে পড়েছেন তাহলে । মানে? কারা আওয়াজ করছিল ? আর কোথা দিয়ে পালাল ?
আওয়াজটা আমিই করছিলাম । না , ভাবলাম ,আপনারা তো ওপরে নাক ডাকিয়ে দিব্যি শুয়ে পড়লেন , এদিকে যদি সত্যি চোর ডাকাত আসে তাহলে তো প্রথমে ওরা আমার হাতদুটো বেঁধে ফেলবে ,তারপর মুখ বেঁধে ফেলবে , তারপর চুরি চামারি যা করার করবে । আমার তো হাত বন্ধ । মুখ বন্ধ । তাই আমি পা দিয়ে দরজায় মেরে মেরে দেখছিলাম আপনারা শুনতে পান কিনা ? যাক , শুনতে পেয়েছেন তাহলে । এবার নিশ্চিন্ত হওয়া গেলো ! তবে এসেছেন কিন্তু বেশ দেরি করে ।
বড় আনন্দ পেলাম ।হরেন রা বেঁচে থাক।
ReplyDeleteবড় আনন্দ পেলাম ।হরেন রা বেঁচে থাক।
ReplyDeletethakuk boiki.thank you Anuradha
ReplyDelete