তিন্তিড়ী
বৃক্ষটির পঞ্চম প্রজন্ম চলিতেছে । ইহার
অর্থ চার চারিটি বৃক্ষের ক্ষয়ের পর এই নবীন বৃক্ষটির উদ্ভাস , একই স্থানে । ইহা
এখনও নবীন । একটি তিন্তি ড়ী বৃক্ষের
আয়ুষ্কাল যদি আনুমানিক দুই শত বৎসর
হয় , তাহা হইলে নেহাত গালগল্প না হইয়া কিঞ্চিত ঐতিহাসিক সত্য ইহার মধ্যে থাকিতেও পারে । বালক রামতনু সুন্দর
সুমিষ্ট কন্ঠস্বর আয়ত্তের বাসনায় এই নবীন বৃক্ষটির পূর্ব প্রজন্ম দের পত্র ছিঁড়িয়া
ছিঁড়িয়া প্রত্যহ খাইতেন । ইহার সপক্ষে কোন যুক্তি উপস্থাপন করা কঠিন । ইতিহাসের
স্রোতস্বিনী নানান রসদ সংগ্রহ করিতে করিতে চলে । স্বামী হরিদাস তাহার সঙ্গীত গুরু ছিলেন । তদুপরি সুফি সন্ত মহম্মদ ঘাউস রামতনুর
উপর উদার হস্তে তাঁহার স্নেহচ্ছায়া
বিছাইয়াছিলেন । তোমর রাজকুলের রানি মৃগ নয়নীও তাঁহার সঙ্গীত কুশলতায় রামতনুকে
মুগ্ধ করিয়াছিলেন । তখন মুঘল শাসন দুর্বার
গতিতে অগ্রগামী । রামতনু , তানসেন হইয়া সম্রাট আকবরের নবরত্ন সভার উজ্জ্বল রত্ন হইয়া
বসিলেন । অসামান্য
কালজয়ী অবদান রাখিলেন । মিয়াঁ উপাধি লাভ
করিলেন। মেঘ গাহিয়া বর্ষণ আনিলেন , দীপক
গাহিবামাত্র দীপে দীপে আলো জ্বলিয়া উঠল । মিয়াঁ কি টোড়ি , মিয়াঁ কি মলহার, মিয়াঁ
কি সারঙ্গ সর্বত্র সুরের ইন্দ্রধনু রচিয়া দিল । জীবনদীপ নির্বাপিত হইলে তানসেন
সমাধিস্থ হইলেন তাঁহার আধ্যাত্মিক গুরু সন্ত মহম্মদ ঘাউসের সমাধির নিকটেই ।
তানসেনের সমাধির
পার্শ্বেই ঘুমাইতেছেন তাঁহারই পুত্র বিলাস খান । কর্ণ পাতিয়া শুনিলেই বুঝিবেন কোথা
হইতে আশাবরী ভাসিয়া আসিতেছে । পর ক্ষণেই মনে হইবে আহা , ইহার মধ্যে টোড়ি
ঢুকিয়া পড়িতেছে । বিলাস খান যে রাগ সৃষ্টি করেন তাহা বিলাস খানি টোড়ি নামে পরিচিত
। জনশ্রুতি হইল পিতার মৃত্যুর পর শোকগ্রস্ত পুত্র মনোবেদনা উজাড় করিয়া রাগ
বাঁধিলেন এবং সেই প্রাণহীন দেহ হস্ত আন্দোলন করিয়া জানাইয়া দিল যে বাঁধনখানি সঠিক
হইয়াছে
মুগ্ধতা
ReplyDeleteযে বাঁধনে বেঁধেছে!
ReplyDelete